
“ব্যাস্ততার মধ্যে ব্যাস্ততম সময় গুলো অতিক্রান্ত হতে থাকে।
চিলেকোঠার ছোট জানালার পাশ দিয়ে একটা কাক উড়ে যায়।
কা কা কা কা।
রাস্তা দিয়ে গাড়ি গুলোর ছুটে চলা। যান্ত্রিক গুঞ্জন।
কোথাও পানি পড়ার শব্দ।
নিরবিচ্ছিন।
ঠিক আলোর ফোটন গুলোর মতো করে।
আহা্রে। আমি আলোর শব্দ শুনি না। শুধু দেখতে পাই।”
এটা হছে আমার কবিতা।
পুলাপান বলে, আমি এইখানেও বিজ্ঞান আনলাম ক্যান! আমি বললাম কোথায়? তারা বলে, আলোর ফোটন।
আমি কি করে বুঝাই আলোর ফোটন বিজ্ঞানের জিনিস কি করে হয়। এতো প্রকৃতিতেই আছে।
তারা আমার দিকে তাকিয়েই থাকে। যেন আমি কবি না বলে সব আমার দোষ।
কিন্তু এই কবিতা একজন কবি করলে কতো প্রশংসা পেত। সবাই একযোগে বলতো – বিজ্ঞানময় কবিতা। খাসা খাসা। এমন কি ভুল ভাল বললেও। যেমন সেই দিন দেখলাম একজন খুব ভাবের সহিত কবিতা পাঠ করছে চিৎকার করে করে, ‘হে প্রেম তুমি ইথারের মাঝে ছড়িয়ে পরো। আমার প্রেয়সীর কাছে আমার বার্তা পৌছে দাও।”
আমি আমার পাশে বসা এক কাব্য সমঝদারকে বললাম, ‘ভাই ইথার বলে তো কিছু নাই। বহুত দিন আগে মাইকেল সন মার্লির এক্সপেরিমেন্ট প্রমাণ করে দিয়েছে ইথার বলে কিছু নেই।’
আমার কথা শুনে সে চোখ রাঙিয়ে বলল, ‘আপনি বিজ্ঞান আর সাহিত্যর কিছু বুঝেন?’
আমি ঘাড় নেড়ে জানালাম, ‘না তো।’
‘তাইলে এতো বকবক করবেন না। যার ন্যূনতম সাহিত্য জ্ঞান নেই সে আসছে এই রকম চমৎকার বৈজ্ঞানিক কবিতায় ভুল ধরতে।’
‘বৈজ্ঞানিক কবিতা! কবিতায় উল্লেখ করা বিজ্ঞানটা তো ভুল।’
‘চুপ করেন তো। কবিতা পাঠের আসরে আসছেন। কবিতা শুনেন। এতো কথা বলবেন না।’
সেই রাগের ঠ্যালায় শুরুতে লেখা কবিতাটা লিখে ফেললাম। মোটে আট লাইন। আরো কয়েক লাইন বাড়ানোর দরকার। কিন্তু কি লিখবো আসছে না। যা আসছে সেটা লেখা উচিৎ হবে না মনে হয়। পরের দুই লাইনে ইচ্ছে হচ্ছে কি জন্য আলো শুনি না সেটা ব্যাখ্যা করা। এখন মনে হচ্ছে না লিখে ভালোই করেছি। লিখলে সবাই বলত, ‘লেকচার কপচাইতেছি’।